সিলেট :: ভারতে মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব আইন সিএএর’র প্রতিবাদ করায় দেশটির রাজধানীতে হিন্দুত্ববাদীদের সহিংসতা, মুসলিম গণহত্যা-নির্যাতন ও মসজিদ-মিনারে অঙ্গিসংযোগের প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ সিলেট মহানগর শাখা।
শুক্রবার বাদ জুমআ বন্দরবাজার দলীয় অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিটি পয়েন্টে গিয়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জমিয়তের নেতাকর্মী ও মুসলিরা আবু জাহেলের উত্তরসূরী সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করে তার দুগালে জুতা নিক্ষেপ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সন্ত্রাসী মোদী নিরীহ মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। নির্বিচারে গুলি করে মারছে। মসজিদ-মাদ্রাসা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে, মিনারে হনুমানের পতাকা লাগিয়েছে। এসব কাজ বিশ্বের ৪০০ কোটি মুসলমানদের কলিজায় আঘাত দিয়েছে। মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদি যোগ দিলে এদেশে বদরের যুদ্ধের পূণরাবৃত্তি হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, শাপলা চত্তরে রক্ত দিয়েছি, এ রক্তের দাগ এখনও শোকায়নি। প্রয়োজনে মোদি দেশে আসলে আবারও রক্ত দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তবুও মুসলমানদের উপর কোন ধরণের নির্যাতন সহ্য করবো না।
ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে এমনটা দাবী করে বক্তারা আরও বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরো বিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।
বক্তারা বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। এ দেশে মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ লুৎফুর রহমানের পরিচালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মহানগর জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ হাফিজ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা খয়রুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সালিম ক্বাসেমী, মহানগর জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আখতারুজ্জামান তালুকদার, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, হাফিজ কবির আহমদ, মহানগর যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা কবির আহমদ, মাওলানা মতিউর রহমান, মাওলানা আসাদ উদ্দিন, সৈয়দ ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিলে মোদি বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল সিলেটের রাজপথ।
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ধর্মের নামে অধর্মের বাজার জমজমাট।যিনি যতো বেশি বানোয়াট,মিথ্যা কিচ্ছা- কাহিনী বলতে পারেন তিনি ততো বড়ো হুজুর।কেরামতের নামে যত্তোসব আজগুবি মিথ্যা কথা! বাঘ নাকি পীর সাহেবকে এসে সালাম দেয়!সাপ পীরের মুরিদ!কিয়ামতের দিন পীর সাহেব জাহাজ নিয়ে মুরিদেদের রক্ষা করবেন!পীরের সামনে বাঘ আর সাপ হাজির করলে পীরাকি বাঘের পেটে গিয়ে ডুকলো অনে।
বর্তমানে ওয়াজের মার্কেট ধর্ম ব্যবসায় রুপ নিয়েছে,একেকজন হুজুরের হাদিয়া নিম্নে ১০ হাজার আর উপরে ৫০/১ লক্ষ টাকা। ওয়াজ কমিটি রিক্সা চালক,দিনমজুরকেও ছাড় দিচ্ছেন না ধর্মের নামে লক্ষ-কোটি সওয়াবের অফার দিয়ে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। (আর ভাড়াটিয়া ধর্মব্যবসায়ী এজন্য বললাম, তাদের পেশাই হচ্ছে ধর্মকে ব্যবহার করে বিনাপঁুজিতে কোটিপতি হওয়া)। চিন্তাকরুন, এক/ দুইঘন্টার আওয়াজে ৫০ হাজার ইনকাম,প্রফেশনাল ওয়াইজ নামক ব্যবসায়ীরা বছরে ধর্মকে পুঁজি করে কোটিকোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। তাদের বাসাবাড়ি,মার্কেট, ব্যাংক ব্যালেন্স দেখলে আপনি অবাক হবেন, অথচ ধর্মব্যবসায়ী হুজুর কোনদিনও তার প্রতিবেশীর অসহায়, দরিদ্র মানুষের কোনো খবর রাখেন না! এগুলোতে তার সময় নেই।অথচ তিনি ওয়াজে মাত্র ৮০০০ টাকার বিনিময়ে ৮ জনকে ৮ টা জান্নাতও বিক্রি করে দেন !
এর নাম কি ধর্ম না অধর্ম?
কোনটা ধর্ম আর কোনটা অধর্ম তা তফাৎ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।ধর্ম মানুষকে নীতি- নৈতিকতা,মানবসেবার শিক্ষা দেয়।প্রিয়নবী সা: সবসময় তার প্রতিবেশির খোঁজ-খবর নিতেন আর ধর্মব্যবসায়ী হুজুর প্রতিবেশির খোঁজ- খবর নিতে পারেন না; কারণ তিনি প্রতিদিন ওয়াজের মার্কেট নিয়েই ব্যস্ত।
অধর্ম মানুষকে সন্ত্রাসী ও ধর্মের নামে ধর্মব্যবসায়ী বানায়। আমি একজন মুসলমান ধর্ম পালন করি, ধর্ম মানি। কিন্তু ধর্মের নামে অধর্ম কখনো মানতে পারি না।
এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ধর্ম আর ধর্মের নামে অধর্ম এক নয়। ধর্মের নামে অধর্ম বা ব্যবসা করা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের চেয়েও জগণ্য। যদিও ধর্মব্যবসায়ী হুজুরদের দাবি তারা ধর্ম রক্ষা করছেন। কিন্তু বাস্তবে তারা ধর্মের সত্যকেই অস্বীকার করে চলেছেন। ধর্মকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন।রাত ১২ টার পরে তাদের আওয়াজের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ জনসমাজ। কুরান- হাদীসের প্রকৃত শিক্ষা না থাকার কারণে তারা ধর্মকে বাণিজ্যের পণ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তাদেরকে হেদায়ত দান করুন।
আসুন,এই সমস্থ ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি। সত্যিকার নায়েবে – রাসুল আল্লাহওয়ালা আলেমদের কে সম্মান করি, যারা টাকার জন্যে নয় বরং একমাত্র আল্লাহতালার সন্তুষ্টির জন্যেই কথা বলেন