Monday, 20 November 2023

ফ্রী ভাতা অলসতা ভিক্ষার মতো।

কৃষক তাহির আলীর গল্প:-

বাংলাদেশের বাসিন্দা তাহির আলী একজন কৃষক। দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিলো। কর্মঠ তাহির আলী কৃষি খামারের সবজি ফলমুল বিক্রি করে বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ সহ পরিবারের সকল ভরনপোষণ চালাতেন। ছেলে দুইটা প্রায়ই বাবার কাজে সহযোগিতা করতো। আর মেয়েটা ঘরে মায়ের সাথে গৃহপালিত মুরগী, কবুতরের দেখাশোনা সেবাযত্ন করে। লেখাপড়ার খরচ ছিলো ষষ্ঠ শ্রেণীর মাসিক ফি ২৫ টাকা, সপ্তম শ্রেণীতে ছিলো ৩০ টাকা তখন ছাত্রছাত্রীদের জন্য তেমন কোন ভাতা ছিলো না। কৃষক তাহির আলীর বয়স যখন ৫০ বছর গ্রামের মেম্বার সাহেব ৬০ বছর ধরিয়ে বয়স্ক ভাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে দিলেন। তাহির আলীর স্ত্রী অবশ্য আরো কয়েক বছর পরে বয়স্ক ভাতার অন্তর্ভুক্ত হন। তিনমাস ছয়মাস পরপর তাহির আলী ভাতার কিছু টাকা পান। তাই তিনি ভাবলেন আমার অভাব নেই। ধীরে ধীরে পরিশ্রম কমিয়ে নিলেন, অসুখে দেখা দিলো প্রতিমাসে দুই তিন হাজার টাকার ঔষধ কিনতে হয়। ছেলে গুলো আগের মতো বাবাকে সাহায্য করেনা। এদিকে বছর খানেক পরে তাহির আলীর স্ত্রী কাজ কাম না করায় বার্ধক্যজনিত রোগ দেখা যায়। আগের চেয়ে সংসারের আয়ের তুলনায় এখন ব্যয়ের হার বেড়ে গেছে। মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় তাহির আলীর স্ত্রী মারা যান। বড় ছেলে পা ভেঙ্গে পঙ্গু  হয়ে যায় লেখা পড়ায় বিপর্যয় হলে বাবা ভাই এক বোনের দায়িত্ব নিতে ছোট একটা মুদি দোকান খোলেন। দুই ভাই মিলে যখন কোনমতে এই দোকানের ব্যবসার আয় দিয়ে সংসার চালাতেন এর একবছর পরে বড় ছেলে প্রতিবন্ধী ভাতার অন্তর্ভুক্ত হন। ধীরে ধীরে ছোট ভাইকে মুদির দোকানে সহযোগিতা কমাতে তাকলেন। ছোট ভাই দোকানে কিছু সময় দিয়ে দোকান বন্ধ করে স্কুলে যায়। বড় ভাই ভাতার টাকা পেয়ে খুশী হয়ে বসে বসে অলসতা বাড়তে থাকে। এভাবে তাহির আলী কাজকর্ম থেকে অব্যাহতি দেন। ঘরে অসুস্থ থাকায় ছয়মাস পরে তার মৃত্যু হয়।

No comments:

Post a Comment