Monday, 23 March 2020

সিলেটে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে স্প্রে করছে পুলিশ

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-এর সংক্রমন ঠেকাতে সিলেট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সোমবার বিকেলে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের মধ্যে জীবানুনাশক ওষুধ স্প্রে মেশিন দিয়ে ছিটানো হয়। এসময় জেলা পুলিশের পক্ষ হতে পথচারীদের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা হয়। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস হতে সুস্থ্য থাকার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত বিভিন্ন নিদের্শনা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে পুলিশ

সোমবার পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণ করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। জেলার প্রত্যেকটি থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়িতে কর্মরত অফিসার-ফোর্সের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ  বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। এছাড়া পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা, যানবাহন ও থানায় আগত সেবা প্রত্যাশিদের ভাইরাস সংক্রমণ হতে সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ ধরণের জীবানু নাশক ওষুধসহ স্প্রে মেশিন ও সর্বসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

সোমবার দুপুর ২ টায় পুলিশ সুপার কার্যালয় হতে জেলার ১১ টি থানা ০২ টি তদন্ত কেন্দ্র ০৩ টি ইমিগ্রেশণ চেকপোস্ট ও ০২ টি অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির প্রতিনিধির নিকট নিরাপত্তা উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বিকাল ৩ টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে বন্দরবাজার-কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধক জীবানু নাশক ওষুধ স্প্রে মেশিন দ্বারা ছিটানো হয়।

এসব কার্যক্রমে অন্যান্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-দক্ষিণ) ইমাম মোহাম্মদ শাদিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মোঃ মাহবুবুল আলম, জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মোঃ লুৎফর রহমান, জেলা বিশেষ শাখার সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান খান প্রমুখ।

সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জেলার প্রত্যেকটি থানা এলাকায় মাইকিংসহ লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি বিদেশ ফেরতদের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন পালনের জন্য পুলিশের পক্ষ হতে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। থানা ফাঁড়িতে কর্মরত অফিসার-ফোর্সের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য জীবানু নাশকসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় চলাচলরত পথচারী যানবাহনের মধ্যে বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে জীবানু নাশক স্প্রে ছিটানো হয়। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

Friday, 20 March 2020

ইতালিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ ডাক্তার সহ ৪২৭ জনের মৃত্যু।

জালাল হাওলাদার, ইতালিঃ  করোনাভাইরাসের থাবায় ইতালিতে আজ  বৃহস্পতিবার ৫ চিকিৎসক মৃত্যু হয়েছে ৪২৭ জনের। এই নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩৪০৫, এই সংখ্যা চীনের (৩২৪৫) চেয়েও বেশী । আজ আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪শ ৮০ জন,  আক্রান্তের সংখ্যা (পজিটিভ) বেড়ে ৩৩ হাজার ১শ ৯০  জন। আজ  সুস্থ হয়েছেন ৪১৫  জন , এ নিয়ে ৪৪৪০ জন সুস্থ হয়েছেন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১০৩৫( মৃত্যু , আক্রান্ত ও সস্থ) । আইসিইউতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ২৪৯৮ ।

আজ ৫ চিকিৎসকসহ এই ইতালিতে ১৩ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে শুধু লোম্বারদিয়া অঞ্চলেই ।

তবে আজ ইতালিতে  আক্রান্তের সংখ্যা  বেড়েছে  তবে  মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।বুধবার  একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৭৫  জন, আক্রান্ত ২ হাজার ৬শ ৪৮ জন।

ইতালি জুড়ে ৭ দিনে ৪৬ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কারন ব্যতীত বাসার বাহিরে চলাচলের জন্য ।

আক্রান্তদের মধ্যে ১২০৯০ জনকে নিজ নিজ বাসায় রেখে চিকিৎসাধীন রয়েছে ।

ইতালির ২০ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায়ই মোট  আক্রান্ত (১৯৮৮৪) ও মৃত্যুর (২১৬৮) সংখ্যা সর্বাধিক । আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ২০৯  জন।

সূত্রঃ লা রিপুবলিকা।

বিশ্বে  করোনা ভাইরাস – সর্বশেষ তথ্য (বৃহস্পতিবার http://www.worldometers.info/coronavirus/ )

মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯৯৯১   জন ।  আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে ২৪২২০৫  জন ।সুস্থ হয়েছেন ৮৬৭১৪ জন  ।

এদিকে আজ চিনে মৃত্যু হয়েছে ৮  জনের ,আক্রান্ত ৩৪  জন এই নিয়ে চিনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩২৪৫ ও আক্রান্ত ৮০৯২৮ জন , সুস্থ হয়েছেন ৭০৪২০জন ।

ইরানে আজ মৃত্যু হয়েছে ১৪৯ জনের ,আক্রান্ত  ১০৮৪৬জন এই নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে১২৮৪  ও আক্রান্ত ১৮৪০৭ জন ,সুস্থ হয়েছেন ৫৯৭৯ জন।

স্পেনে আজ মৃত্যু হয়েছে ১৯৩ জন, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৩১  জনের ,আক্রান্ত হয়েছেন ১৮০৭৭  জন, সুস্থ হয়েছেন ১১০৭ জন।

ফ্রান্সে আজ মৃত্যু ১০৮ , মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৭২জনের ,আক্রান্ত ১০৯৯৫ জন , সুস্থ হয়েছেন ৬০২  জন।

যুক্তরাজ্যে আজ মৃত্যু ৪০জন, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৪৪ জনের ,আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৬৭  জন, সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন।

আমেরিকায় আজ ২৬  জনের মৃত্যু , এই নিয়ে মৃত্যু ১৭৬ জন ,আক্রান্ত ১১৭৮০   জন, সুস্থ হয়েছেন ১০৮জন।

জার্মানিতে আজ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, এই নিয়ে ৪৪  মৃত্যু জনের ,আক্রান্ত  ১৪৩৬৬ জন, সুস্থ হয়েছেন ১১৩ জন।

সুইজারল্যান্ডে আজ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, এই নিয়ে ৪৩মৃত্যু জনের ,আক্রান্ত  ৪১৩১ জন, সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন।

নেদারল্যান্ডে আজ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, এই নিয়ে ৭৬ মৃত্যু জনের ,আক্রান্ত ২৪৬০ জন, সুস্থ হয়েছেন ২ জন।

জাপানে আজ ৩জনের মৃত্যু হয়েছে, এই নিয়ে  মৃত্যু ৩২  জনের ,আক্রান্ত  ৯২৩ জন, সুস্থ হয়েছেন ১৪৪ জন।

দক্ষিন কোরিয়ায় আজ মৃত্যু ৭  ,আক্রান্ত ১৫২ জন, এই নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা  ৯১ ও আক্রান্ত ৮৫৬৫  জন ,সুস্থ হয়েছেন ১৯৪৭ জন।

Wednesday, 18 March 2020

লন্ডনে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হওয়া মাহমুদুর রহমান এর দাফন যেভাবে হবে।

 লন্ডনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশী মৃত মাহমুদুর রহমানের দাফন আগামী ১৯শে মার্চ বৃহস্পতিবার লন্ডনের হেনল্ট পিচ অফ গার্ডেনে অনুষ্টিত হবে।মৌলভীবাজারের প্রতিষ্ঠিত ট্রেভেলস ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৬ই মার্চ সেন্ট্রাল লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

মরহুম মাহমুদুর রহমানের ছেলে মুহিবুর রহমান জানান- ব্রিকলেন ফোনারেল সার্ভিসের তত্বাবধানে আগামী ১৯শে মার্চ বৃহস্পতিবার হেনল্ট পিচ অফ গার্ডেনে তার বাবার দাফন অনুষ্ঠিত হবে। এবিষয়ে ব্রিকলেন ফোনারেল সার্ভিসের ডাইরেক্টার শওকত সিদ্দিক বলেছেন, তারা শুধু আইনি কাগজ পত্র ব্যবস্থা করে পিচ অফ গার্ডেন কতৃপক্ষকে হস্তান্তর করবেন, বাকী সবকাজ পিছ অফ অফ গার্ডেনের লোকেরা করবেন।

তিনি বলেন বিশেষ নিরাপত্তায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃতদেহ সেখানেই গোসল ও দাফন করা হবে। এ কাজ করার জন্য পিচ অফ গার্ডেন চারজন লোক নিয়োগ করেছে। বিশেষ কাপড় ও হেলমেট পরিধান করে লাশের গোসল করাবে এবং লাশ কবরে রাখবে।এ সময় কাউকে লাশ দেখানো হবে না।

গোসলের পর লাশের ফটো তুলে পরিবারের সদস্যদের দেখানো হবে এবং ফটো দেখানোর পর ডিলিট করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া সেখানে দুটি গাড়ীতে করে মোট ১৪ জন লোক যেতে পারবেন এর বেশী কোন লোক জানাযায় যেতে পারবেন না এবং জানাযার সময় একজন থেকে আরেক জনের দুরত্ব ১মিটার করে দাঁড়াতে হবে। লাশ কবরে রাখার সময় কবর থেকে দুই মিটার দুরত্বে দাঁড়াতে পারবেন।ফোনারেল সার্ভিসের জন্য মোট ৪৩০০ পাউন্ড ব্যায় হবে।

উল্লেখ্য, মরহুম মাহমুদুর রহমান গতবছর তার নাতনীর বিয়েতে যোগদানের জন্য সস্ত্রীক লন্ডনে বেড়াতে আসেন। লন্ডনে ব্রেন ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রথমে ইউসিএল হসপিটালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর পর সেখান থেকে তাকে গ্রেট অরমন্ড হসপিটালে স্থানান্তর করা হয় এবং ধীরে ধীরে তিনি উন্নতির দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হসপিটালে থাকা অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হন এবং ১৬ই মার্চ একই হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

মরহুমের আত্বার শান্তির জন্য তার ছেলে মুহিবুর রহমান সকলের কাছে দোয়া কামনা করছেন।

সূত্র: ৫২বাংলাটিভি ডটকম

Thursday, 12 March 2020

আরব আমিরাতের শারজায় বাংলাদেশী স্বর্ন ব্যবসায়ীকে মারধর করে চার কেজি স্বর্ন চুরি

আব্দুল্লাহ আল শাহীন, ইউএইঃ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন স্বর্ণের ওয়ার্কশপের মালিককে গুরুতর আহত করে ৪ কেজি স্বর্ণের বিস্কুট নিয়ে পালিয়েছে ৪ ভারতীয় নাগরিক।

জানা যায় গত শুক্রবার ৫৭ বছর বয়সী স্বর্ণকার বাংলাদেশিকে মারধর করে স্বর্ণের ওয়ার্কশপের চার কর্মচারী। এসময় তারা লকার থেকে নিজ নিজ পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

মালিকের ছেলে শিশির কুমার দাস জানান, “গত শুক্রবার দাদির মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা দেশে যাওয়ার কথা ছিল। বাবাকে ওয়ার্কশপ থেকে আনতে গিয়ে দেখি বাবা দোকানে নেই। পাশে কর্মচারীদের বাসায় গিয়েও তাদের পাওয়া যায় নি। বাসায় এসেও না পেয়ে রাতে সন্দেহজনক স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে নিখোঁজ হিসেবে মামলা করি। পুলিশ এসে খোজাখুজির এক পর্যায়ে বাবাকে আহত অবস্থায় ওয়ার্কশপের ভেতর থেকে উদ্ধার করে।”

প্রশাসনের ভাষ্যমতে ওয়ার্কশপের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় তিনজন কর্মচারী ভেতরে ঢুকে মালিককে বেধড়ক মারধর করে এবং একজন বাহিরে পাহারা দিচ্ছে। চার ভারতীয় কর্মচারী স্বর্ণ ছিনতাইয়ের এক ঘন্টার মধ্যেই দুবাই ত্যাগ করে। এটা পূর্বপরিকল্পিত চুরি ছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হবে এবং স্বর্ণের বিস্কুট উদ্ধার করা হবে।

জকিগঞ্জে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী নিখোঁজ

জকিগঞ্জের রতনগঞ্জ বাজারস্থ জিএমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পলি বেগম ২ দিন থেকে নিখোঁজ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ছাত্রীর মা মানিকপুর ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের রিনা বেগম চৌধুরী জকিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

তিনি জানান, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বাহির হয়ে আর ফিরে আসেনি। মা রিনা আক্তার বলেন, শত্রুতা করে কেউ তাকে অপহরণ করতে করতে পারে। তিনি তার মেয়েকে ফিরে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

Monday, 9 March 2020

জকিগঞ্জ উপজেলা আনসার ভিডিপির অফিসে দুজন কর্মকর্তা মাসে তিন চারদি ডিউটি করে পুরো মাসের বেতন ভাতা ভোগ করেন।

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ :: জকিগঞ্জে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে বির্তকিত উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা বিধান চক্রবর্তী ও প্রশিক্ষক আবু তাহের মাসে চার-পাঁচ দিন অফিস করেন। ওই দুই কর্মকর্তা মাসের বাকি দিনগুলো অনুপস্থিত থাকেন। প্রতি মাসে চার-পাঁচ দিন ব্যাতিত উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসের গেইট থাকে তালাবদ্ধ। কর্মস্থলে তারা দু\'জন যোগদানের পর থেকেই এভাবেই করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

দু\'জনের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। তদন্তে সত্যতাও মিলেছে এসব অভিযোগের। এরপরও কর্মস্থলে বহাল রয়েছেন এই দুই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।
সরেজমিনে উপজেলা আনসার কর্মকর্তার কার্যালয়ে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের একাধিক দিন খোঁজ নিয়ে গেইট তালাবদ্ধ থাকার সত্যতাও পাওয়া গেছে। চলতি সপ্তাহের রবিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত নিয়মিত আনসার কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে গেইট তালাবদ্ধ দেখা যায়। গেইটের সামনে দু\' একজন আনসার সদস্যকে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেলে তাদের কাছে আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা বিধান চক্রবর্তী ও প্রশিক্ষক আবু তাহের চৌধুরী কোথায় এমন কথা জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, ‘দু\'জন স্যার অফিসে আসেন মাসে চার-পাঁচ দিন’।

উপস্থিত আনসার সদস্যদের কথা শুনে তাৎক্ষণিক উপজেলা আনসার কর্মকর্তা বিধান চক্রবর্তী ও প্রশিক্ষক আবু তাহেরকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কল করা হলে ‘তারা অফিসে আছেন বলে জানান’ প্রতিবেদককে। কিন্তু ঐ প্রতিবেদক তখনো অফিসের সামনের গেইটে দাঁড়িয়ে আছেন বলে জানানো হলে দু\'জনই কথা না বলে কল কেটে মোবাইল বন্ধ করে দেন। গেইটের সামনে সুফিয়ান নামের একজন লোক দাঁড়িয়ে অপেক্ষারত থাকতে দেখা যায়। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আনসার প্রশিক্ষণে যাওয়ার জন্য কয়েকদিন থেকে কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসেন। কিন্তু অফিস তালাবদ্ধ দেখে ফিরে যান। সরকারি অফিসে নিয়মিত তালাবদ্ধ পেয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, প্রতি মাসে চার-পাঁচদিন তারা অফিসে আসেন। তাও মাত্র দুই থেকে তিন ঘন্টা বসেন। অফিসের মূল গেইট সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। সাধারণ আনসার সদস্যরা কাগজপত্র নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে তাদের দেখা পাননা। একই কর্মস্থলে দুজন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন কর্মরত থাকায় নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সাধারণ কয়েকজন আনসার সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেও দু\'জন কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করা হচ্ছে। প্রতি মাসে চার-পাঁচদিন অফিস করে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন তারা। আনসার সদস্যরা কোন প্রয়োজন মত তাদেরকে পান না। পূজাসহ বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করার পর আনসার সদস্যদেরকে নামে মাত্র ভাতা দিয়ে বাকি টাকা বিধান চক্রবর্তী ও আবু তাহের সাবাড় করে দেন। ‘ভাতার টাকা, প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাৎ ও প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে উৎকুচ আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে’। দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম অভিযোগগুলোর সরেজমিন তদন্ত করলে এই দুই কর্মকর্তা ফেঁসে যাবেন বলে তাদের ধারণা।

আনসার দলনেতা রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, আনসার প্রশিক্ষণে কেউ যেতে চাইলে বিধান চক্রবর্তী বড় অঙ্কের চাঁদা দাবী করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে নানাভাবে হয়রানী করেন। ‘টাকা ছাড়া কথাই বলেন না দু\'জন কর্মকর্তা’।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা আনসার কর্মকর্তা বিধান চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করে অফিসে অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন শুনে উত্তেজিত হয়ে বলেন, সাংবাদিকদের আর কোন কাজ নাই নি। সাংবাদিকরা এসব প্রশ্ন করার কে? সাংবাদিকরা তার মোবাইল কল করতে নিষেধ দিয়ে তিনি লাইন কেটে দেন। এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক আবু তাহেরের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ নিয়ে সিলেট জেলা আনসার ভিডিপির কমান্ড্যান্ট ফখরুল আলমের সাথে মঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অফিস না করার ঘটনাটি দুঃখজনক। অবশ্যই এই দু\'জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই দুই কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর আমরা সরেজমিন তদন্ত করে দুর্নীতিতে তারা জড়িত এর সত্যতা পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। দ্রত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনসার ভিডিপির সিলেট বিভাগীয় পরিচালক সারোয়ার জাহান চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। সরকার প্রতিটি সরকারি অফিসকে যেখানে জনগন বান্ধব ও দুর্নীতি মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে আনসারের কোন কর্মকর্তা অফিসে অনুপস্থিত থেকে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে হবে। আনসার ভিডিপি বাহিনীতে দুর্নীতিবাজ কারো স্থান হবেনা।

Friday, 6 March 2020

করোনা মানেই মৃত্যু নয়

'করোনা' মানেই 'মৃত্যু' নয়
বাঁচতে হলে জানতে হয়।

দেশি-বিদেশি মিডিয়া হাউজগুলোকে গত মাস দেড়েক ধরে খুব সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি। দেশীয় মিডিয়া হাউজের কথা অবশ্য ধর্তব্যের বাইরে, কারণ এদের নিউজগুলোর মাঝে কোন সৃজনশীলতা নেই। নেই নিজস্ব রিসার্চ, ডাটা। এরা যেখানে যা পায় তা-ই অনুবাদ করে ছেড়ে দেয়। তাই, গ্লোবাল সিরিয়াস ইস্যুতে সচেতন ব্যক্তিমাত্রই বিদেশি মিডিয়া হাউজগুলোর ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন, এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু, 'করোনা' ইস্যুতে এই বিদেশি মিডিয়া, বিশেষ করে আমেরিকান মিডিয়াগুলোকে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে আমার কাছে। তারা সারাদিন 'করোনা' কে তাদের লিড নিউজ হিশেবে দেখাচ্ছে, খবরের পাতা থেকে জিনিসটা সরাচ্ছেই না একদম। বিশ্বের কোন প্রান্ত থেকে যদি করোনাতে কোন একটা মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়, সাথে সাথে সেটা তুলে দিচ্ছে লিড নিউজে৷

মিডিয়াগুলো করোনায় মৃতের সংখ্যা হাইলাইট করছে বলে আমি বিরোধিতা করছিনা। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, করোনায় আক্রান্ত হাজার হাজার লোক প্রতিদিন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছে, এই নিউজটা লিড নিউজ হিশেবে দেখাচ্ছেনা আমেরিকান মিডিয়াগুলো, বিশেষ করে সি এন এন, ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার ২% এর কাছাকাছি। এই ২% এর পাশে আমি ইচ্ছে করলে 'মাত্র' শব্দ যোগ করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। আমার কাছে একটা প্রাণের মূল্যও অনেক। কিন্তু ব্যাপার হলো, এই যে হাজার হাজার মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছে, এটা কেনো মানুষকে জানানো হচ্ছেনা?

আরেকটা ইন্টারেস্টিং ডাটা শেয়ার করি। করোনা নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হইচই করছে আমেরিকান মিডিয়া হাউজগুলোই। মুহুর্তে মুহুর্মুহু সংবাদ ছাপাচ্ছে তারা করোনা নিয়ে৷ এতে করে সারা পৃথিবীতে একটা প্যানিক ছড়িয়ে পড়েছে ভালোভাবে যে, করোনা ধরলে আর বুঝি রক্ষে নেই৷ অথচ, করোনায় মৃতের সংখ্যার পাশাপাশি আমাদের যদি সুস্থ হয়ে উঠার ডাটাও মিডিয়া জানাতো, তাহলে বোধকরি মানুষ এভাবে প্যানিকড হয়ে পড়তো না। মানুষ এখন ভাবছে, করোনা মানেই মৃত্যু।

কিন্তু, এই ফি বছর, খোদ আমেরিকাতেই নর্মাল ফ্লু'তে মারা গেছে বিশ হাজারের মতো মানুষ৷ একেবারে টাটকা খবর কিন্তু। নর্মাল ফ্লু মানে বুঝেছেন তো? এই যে জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদিতে। দেখুন, এই নর্মাল ফ্লুয়ের জন্য দুনিয়ায় হাজার রকমের প্রতিষেধক মজুদ আছে। আছে বাহারি রকমের চিকিৎসা৷ এতোকিছু থাকা সত্ত্বেও, আমেরিকার মতোন দেশে এই ফ্লুতেই মারা গেছে বিশ হাজারেরও অধিক মানুষ। পুরো বিশ্বের হিশেব যে কি, তা তো বলার বাইরে। অথচ, যে করোনাকে নিয়ে এতো হইচই মিডিয়া করছে, সেই করোনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২ হাজারের মতো। এই করোনার কিন্তু কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। কোন প্রতিষেধক না থেকেও এতে মারা গেছে ২ হাজার, আর হাজার রকমের প্রতিষেধক মজুদ থাকার পরেও নর্মাল ফ্লুতে আমেরিকায় নাই হয়ে গেছে বিশ হাজার। তাহলে, কোনটাকে বেশি ডেঞ্জারাস মনে হচ্ছে ডাটানুসারে? কিন্তু দেখুন, আমেরিকার মিডিয়া এটা নিয়ে কোন বাতচিত করছেনা। তারা সারাদিন ওই এক করোনা নিয়েই আছে। এখানে কি তাহলে কোন 'গেম' চলছে? আমি জানিনা।

'করোনা আর মৃত্যু' শব্দ দুটো শুনতে শুনতে আপনি নিশ্চয় ভয়ে কুঁকড়ে আছেন, না? তাহলে আপনাকে কয়েকটা আশার কথা শুনাই৷ হয়তো আপনার ভয়টা চলে যাবে। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।

- এখন পর্যন্ত করোনাতে কোন শিশুর মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যায়নি। শিশু মানে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ০-৯ বছরের কোন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা দুনিয়ার কোথাও ঘটেনি। তাই, আপনার বাচ্চার ব্যাপারে বেশি ভয় পাওয়ার দরকার নেই। তবে, সতর্ক থাকতে হবে অবশ্যই।

- ১০-১৯ বছরের একজনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেছে এখন পর্যন্ত, তবে অনেকের মতে, সেটাও রহস্যজনক। আদৌ করোনায় কিনা, তা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত না।

- করোনা আক্রান্ত ৭০,০০০ মানুষের ওপরে একটা স্ট্যাডি হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে ৮১% মানুষের সর্দি-কাশি হচ্ছে করোনার ফলে, আবার সেরেও যাচ্ছে। সুতরাং, বিশ্বাস রাখুন, আপনার-আমার যদি করোনা হয়েও থাকে, সাধারণ জ্বর-সর্দির মতো তা আবার সেরেও যাবে, ইন শা আল্লাহ৷ আশা নিয়ে বাঁচুন, ভালো থাকবেন।

- ডাটা অনুসারে, করোনায় যারা মারা গিয়েছে, তাদের ৫০  ভাগের বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্বে। আর ৩০% এর বয়স ৬০-৬৯ এর মধ্যে। মানে, ৮০% লোক যারা মারা গেলো বা যাচ্ছে, তাদের গড় বয়স ৬০-৭০ এর উর্ধ্বে। আরো স্পষ্টভাবে, এই করোনায় বুড়োরাই মারা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

না, ভয় পাওয়ার কারণ নেই। বুড়ো হলেই যে করোনায় ধপাস করে মারা পড়ছে, তা কিন্তু নয়। রিসার্চে দেখা গেছে, বুড়োদের মধ্যে করোনায় যারা মারা যাচ্ছে, তারা প্রায় সবাই আগে থেকেই কোন না কোন রোগে আক্রান্ত, যেমন- ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, অ্যাজমা, লিভার ইত্যাদি।

সব ডাটাকে একত্র করলে যা সারমর্ম দাঁড়ায় তা হলো, সুস্থ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের বেশি, তাদের ক্ষেত্রে করোনায় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই, আশাহত হবেন না। মনে জোর রাখুন।

গত দু'দিন ধরে আমার নিজেরও হালকা হালকা গা গরম। মাঝে মাঝে মনে হলো, আমাকে বুঝি করোনাই পেয়ে গেলো। তো, আমি যদি এই ফ্যাক্টরগুলো সম্পর্কে না জানতাম, আমি কি ভাবতাম জানেন? আমি ভাবতাম, আমার যদি সত্যিই সত্যিই করোনা ধরা পড়ে, তাহলে সেদিন আমি আর বাসায় ফিরবো না। আমার মাধ্যমে আমার মা, স্ত্রী, সন্তান আক্রান্ত হবে, আমি এটা ভাবতেই পারিনা। তো, কি করবো তাহলে? কক্সবাজারের দিকে চলে যাবো, কিংবা কোন নির্জন পাহাড়ি অঞ্চলে। বাসায় কোনোভাবে ব্যাংকের কার্ডটা পাঠিয়ে বলবো, 'বেঁচে থাকলে দেখা হবে'।

তো, বাঁচলে তো ফিরবো। যদি না বাঁচি। সম্ভবত আমার লাশটাও খুঁজে পাবেনা আমার পরিবার৷ এই ভাবনাগুলো কোত্থেকে আসতো জানেন? প্যানিক থেকে। প্যানিক এতো ভয়ানক জিনিস। তাই, ভাইয়েরা, প্যানিক হবেন না। স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন, কিন্তু অতি অবশ্যই সতর্কতার সাথে৷

এই যে বিশাল একটা লেখা পড়লেন, এই লেখার সারমর্ম কি? আমি কি করোনা নিয়ে হাসি তামাশা করছি? পাত্তা না দিতে বলছি?

না, মোটেও তা নয়। করোনাকে অবশ্যই পাত্তা দিতে হবে। সতর্ক হতে হবে৷ বাইরে বেরুলে মাস্ক পড়তে হবে, বারেবারে হাত ধুতে হবে, লোকারণ্য এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। সবই করতে হবে, কিন্তু প্যানিক হওয়া যাবেনা। প্যানিক হলে স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হবে ভীষণভাবে। তখন করোনায় আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা না থাকলেও, প্যানিক থেকে তৈরি ডিপ্রেশানে আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা কিন্তু হুড়মুড় করে বেড়ে যাবে।

চলুন, সকাল-সন্ধ্যার যিকিরগুলো নিয়মিত করি। বেশি বেশি ইস্তিগফার করি। ভয় না পেয়ে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করি।

clctd #Arif_Azad

সিলেটে ব্যবসায়ীদের হাতে কলেজ ছাত্র খুন।

সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ছুরিকাঘাতে নজরুল ইসলাম মুন্না (২১) এক কলেজ ছাত্র খুন হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কাজী ইলিয়াস গলির মুখে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় শুক্রবার নিহতের পিতা মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত রেখে সিলেট কোতোয়ালী থনায় একটি মামলা করেছেন। মামলার ১ নম্বর আসামি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সিরাজুল হকের ছেলে দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত মুন্না গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাওঁ ইউনিয়নের বহর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে ও গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের বিএ (অনার্স)২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। নগরীর চৌকিদেখি এলাকার বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন মুন্না।

নিহতের পিতা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলে নজরুল ইসলাম মুন্না গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজে বিএ (সম্মান) বাংলা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখার পাশাপাশি সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। 

প্রতিদিনের ন্যায় ৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বাড়ি থেকে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। কর্মস্থল থেকে বেতন তুলে বাজার করার জন্য রাত সাড়ে ৮ টার দিকে জিন্দাবাজার পৌঁছে। জিন্দাবাজার কৃষি ব্যাংকের সামনে পৌঁছার পর স্থানীয় ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা সংঙ্গবদ্ধ হয়ে একজন ক্রেতাকে পেটাচ্ছিলো। বিষয়টি দেখে নজরুল ইসলাম মুন্না ঐ ক্রেতাকে না মারার জন্য অনুরোধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা নজরুল ইসলাম মুন্নার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে নজরুলকে ঘটনাস্থলে রেখে পালিয়ে যান। নজরুল ইসলাম মুন্নাকে গুরুত্ব আহত অবস্থায় পথ যাত্রীরা উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত দেখে ওসমানী মেডিকেল কতৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা জাতীয় বক্ষব্যাদি হাসপাতালে নজরুলকে পাঠানোর অনুরোধ করেন। নজরুল ইসলাম মুন্নাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় পৌঁছার পর নজরুল ইসলাম মুন্না মৃত্যুবরণ করেন।

এব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া জানান, জিন্দাবাজার কৃষি ব্যাংকের সামনে মারামারির ঘটনায় নজরুল ইসলাম মুন্না খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম মুন্নার পিতা মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তা্র করা হয়েছে।

Wednesday, 4 March 2020

দিল্লীর নর্দমায় মিলল পচাগলা ১১ মরদেহ

ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

ভারতের দিল্লিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের পর থেকে রাজধানীর নর্দমায় মিলছে লাশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত গত পাঁচ দিনে ১১টি পচা গলা লাশ ভেসে উঠেছে।

সব মিলিয়ে কয়েক দিনের ওই সহিংসতায় অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে ৩০০ জন।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, প্রতিদিনই হাসপাতালে স্বজনদের খোঁজে মানুষের ভিড় বাড়ছে। অনেকেই সারা দিন বসে থেকে দিন শেষে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে।

বিতর্কিত সিএএকে কেন্দ্র করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লির উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সামনেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ মুসলিমদের অসংখ্য বাড়িঘর ও দোকানপাট বেছে বেছে আগুন ধরিয়ে দেয় উগ্রপন্থীরা।

টানা তিন দিন ধরে চলে এ হামলা, অগ্নিকাণ্ড। ২৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লির নর্দমায় প্রথম গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা অঙ্কিত শর্মার লাশ ভেসে উঠেছিল। তাকে সহিংসতার মধ্যে উন্মত্ত জনতা পিটিয়ে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

সর্বশেষ রোববার ও সোমবার নর্দমাতে পাওয়া গেছে পাঁচটি অজ্ঞাত মৃতদেহ। মরদেহগুলোর বেশির ভাগই পচে গেছে। ফলে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ডিএনএ পরীক্ষা করে এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।

তবে ভেসে ওঠা মৃতদেহগুলোর সবই দিল্লির সহিংসতায় নিহত কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছে পুলিশ।

দিল্লিতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক চিত্র প্রশাসনের তৈরি করা একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্টে উঠে এসেছে।

উত্তর-পূর্ব জেলার তৈরি ওই রিপোর্টে বলা হয়, এখন পর্যন্ত সহিংসতার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১২২টি বাড়ি, ৩২২টি দোকান এবং ৩০১টি গাড়ি।

সোমবার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, চূড়ান্ত রিপোর্টে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জানা যায়, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনে তৈরি ১৮টি দলের পেশ করা তথ্যের ভিত্তিতেই ওই অন্তর্বর্তী রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নির্দেশে এই দলগুলো উত্তর-পূর্ব দিল্লির সহিংসতা বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে ‘ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট সার্ভে’ চালিয়েছে।

দাঙ্গার পর থেকে এখনও প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের খোঁজে হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনেরা। মর্গে নতুন কোনো লাশ এলে সেখানে দৌড়াচ্ছেন।

গুরু তেজ বাহাদুর (জিটিবি) হাসপাতালে আসা সোনিয়া বিহারের বাসিন্দা পঙ্কজ বলেন, ‘আমার মা পুনম সিং এবং ভাগ্নে শাগুন ২৭ ফেব্রুয়ারি এ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসার জন্য। তারপর থেকে তাদের খোঁজ মিলছে না। লোক নায়ক হাসপাতাল, জগপ্রদেশ চন্দ্র হাসপাতালেও খোঁজ নিয়েছি, পাইনি। আমার মায়ের ফোনও বন্ধ পাচ্ছি।’